লাভ ক্যান্ডি
“লাভ ক্যান্ডি” শুনে মনে হয় খাওয়ার জিনিস। যেটা অনেক টেস্টি & রসালো !
হ্যাঁ এটা একটা চকলেটের নাম।তবে এখানে এই লাভ ক্যান্ডি সেই লাভ ক্যান্ডি নয়! লাভ ক্যান্ডি একটা বইয়ের নাম।এটা চকলেটের মতো চুষে খাওয়া যায়না ঠিকই,তবে স্বাদটা চকলেটের চেয়েও হাজার গুণ বেশি।
চকলেটের স্বাদ মুখে লেগে থাকা পর্যন্ত থাকে! কিন্তু এই লাভ ক্যান্ডি পড়ে বাস্তবে রূপ দিতে পারলে আজীবন এর স্বাদটা উপভোগ করা যাবে!
যাকগে এসব কথা বাদ দিলাম।
আসল কথাটা বলি,
“লাভ ক্যান্ডি” বইটি হাতে পাওয়া মাত্র খুব ভালোভাবে দেখলাম।বেশ ভালোই লেগেছে।যেহেতু কালারটা ছিল দূধেআলতার কালার।বই দেখে মনে হচ্ছে এক গামলা দূধের মধ্যে একবাটি গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।আপনমনে কিছুক্ষণ ভাবলাম,যে বইটা বাইরে দেখতে এত্ত সুন্দর; না জানি পড়তে কত মজাদার হয়!
তাই আর সাতপাঁচ না ভেবে পড়তে যাচ্ছিলাম।দেখি কভার পেইজের ভেতর চার লাইনের একটা লিখা আছে।
দ্বিতীয়&চতুর্থ লাইনটা বারবার পড়ি–
“প্রতিটি যুবতীর কাছে ‘লাভ ক্যান্ডি’ পৌঁছুক”
“প্রতিটি স্ত্রী ‘লাভ ক্যান্ডি ‘বুকে ধারণ করুক”
এই দু’লাইন পড়ে বইটি পড়ার প্রতি আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো।
লেখকের কথা দিয়ে পড়া শুরু করি।বাট কিছুই তো বুঝলাম না। ওনার আব্বু এমন কেন করছেন! বারবার একি কথা-
“আব্বু আমি পড়তে পারছিনা।
আব্বু আমি আর পড়তে পারছিনা।
আব্বু আমি আর একটুও পড়তে পারছিনা।”
আমি এখনো জানিনা এমন করার কারণটা কি!হয়তো “ইউটার্ন”(লেখকের প্রকাশিত আরেকটি বই)পড়লে কিছুটা বুঝতে সক্ষম হবো।
..
এরপর,পড়া শুরু করেছি। ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ি।কোন বিরক্তি আসেনা।কারণ এটা এমন একটা বই যেটা পড়লে নিজেই নিজের অজান্তে ভাবনার জগতে হারিয়ে যায়।
আহ্! যদি স্নেহা আর আদিবের মতো আমারও এমন একটা….
আমার তো খুউউউব ভাল্লাগে এমন দুষ্টুমিষ্টি বউ পাগল আর জামাই পাগলিদের গল্প পড়তে!
অনেক মজা পেয়েছি।স্বামী -স্ত্রীর মাঝে কি মধুর সম্পর্ক। সারাদিন দুষ্টমিষ্টি ঝগড়া আর খুনসুটি করে কাটিয়ে দেয়।অবশ্য কাজও করে! কাজের ফাঁকে ফাঁকে এসব আরকি!
স্নেহা আর আদিব তো ভালো আছে।কিন্তু,তার বন্ধু হাসান-
ওর জীবনটাই বেদনা! মাইশা আর হাসান একে অন্যের সাথে মিলেনা।সবটা নিজেদের দোষ।প্রতিটা মেয়ের উচিত তার স্বামীকে বুঝা! আর তা নাহলে সংসারে আগুন জ্বলবে এটাই স্বাভাবিক।
বই পড়তে পড়তে আমি অবাক হয়ে যায় আদিবের কথা গুলো শুনে।কত সুন্দর &স্পষ্ট ভাষায় বুঝাতে পারে। আর তার বলা ভালোবাসার সংজ্ঞা গুলো কিন্তু সেই হয়েছে সেই!
‘মনে হয় আদিব প্রেম বিশেষজ্ঞ!’
বই পড়তে পড়তে একসময় আমার চোখ দিয়ে পানি চলে আসছিল!নিজের অজান্তে কেঁদে ফেলছি।আদিবের বলা একটা গল্পে —
‘নববধূ সাজে সজ্জিত হয়ে সারা বসে বসে আগামী দিনের স্বপ্ন বুনছে।অন্যদিকে সেই মানুষটাই আর নেই যাকে এক পলক দেখার জন্য সারা অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছে।’
“লাভ ক্যান্ডি”র মধ্যে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো ওটা হচ্ছে ‘সরস চিঠি’ আমার মনে হয় প্রতিটা মেয়ের একবার হলেও ঐ চিঠিটা পড়া দরকার।জাস্ট পড়া নয়।আমলও করতে হবে! তাহলেই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভক্তি-শ্রদ্ধা,ভালোবাসা দিনদিন বৃদ্ধি পাবে।আর প্রতিটি সংসার হয়ে উঠবে সুখের..
অনেক তো বলেছি! ভাল্লাগছে এমন কয়েকটা লাইন তুলে ধরা যাক-
আদিবের লিখা বউ রচনার ভূমিকাঃ-বউ একটি দুষ্টুমিষ্টি পাগলির নাম।পাগলের মতো তাদের জটলা চুল না থাকলেও পাগল করে দেওয়ার মতো সুরভিত রেশমি চুল ঠিকই আছে।
স্নেহার জামাই রচনার ভূমিকাঃ-জামাই একটা টক-ঝাল-মিষ্টি পাগলের নাম।পাগলের মতো তাদের অদ্ভুতুড়ে স্বভাব না থাকলেও টক-ঝাল-মিষ্টির অমাইক মিশেলে দেওয়ার মতো একটি মন ঠিকই আছে।
[–আচ্ছা আমি যদি আজ রাতটির জন্য আপনার হাত না ছাড়ি তাতে কি আপনার কষ্ট হবে?
–ফাহিম অপর হাত সারার মাথায় রেখে স্থির কন্ঠে বলল,বরং ছেড়ে দিলেই কষ্ট হবে।]
“লাভ ক্যান্ডি’র যে কথাটা পড়ে আমি খুব হেসেছি–
আচ্ছা ধন্যবাদ আদিব স্যার
ধন্যবাদ আদিব সাহেব
ধন্যবাদ আদিব ভাই
ধন্যবাদ শালা আদিব্বা
আর হ্যাঁ, এতকিছুর মাঝে কিন্তু ডা: রাকিবকে ভুলে গেলে চলবে না। আজ যদি বাংলাদেশে উনার মতো বেশি নাহলেও স্বল্প সংখ্যক ডাক্তার থাকতো তাহলে মানবসমাজ আরো উন্নতির পথে এগোতো।
আর যদি প্রতিটি স্বামী আদিবের মতো সচেতন হতো তাহলে নারীর জীবন ধন্য হয়ে যেতো এমন স্বামী পেয়ে।
একটি
প্রতিটি যুবকের হাতে লাভ ক্যান্ডি থাকুক।
প্রতিটি যুবতীর কাছে লাভ ক্যান্ডি পৌঁছুক।
প্রতিটি স্বামী লাভ ক্যান্ডি পড়ুক।
প্রতিটি স্ত্রী লাভ ক্যান্ডি ধারন করুক।
প্রিয় লেখককে দুই আকাশ ভালোবাসা
Reviewer: Ayesha Binte Saba